মৃত্তিকার ক্ষারীয়তা: কারণ, প্রভাব এবং উদাহরণ
ভূমিকা
মৃত্তিকার pH মান যদি ৭ এর বেশি হয়, তখন সেটি ক্ষারীয় মৃত্তিকা হিসেবে পরিচিত। ক্ষারীয় মৃত্তিকা সাধারণত ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এর মতো খনিজ পদার্থের উচ্চ মাত্রার কারণে গঠিত হয়। এই ধরনের মৃত্তিকা সব ধরনের উদ্ভিদের জন্য ভালো নয়, কারণ এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
মৃত্তিকার ক্ষারীয় হওয়ার প্রধান কারণ
১. আদিশিলা বা জনক শিলার প্রভাব
যদি মৃত্তিকার উৎসস্থল বা শিলা ক্ষারীয় প্রকৃতির হয়, তবে সেখান থেকে তৈরি মৃত্তিকাও স্বাভাবিকভাবেই ক্ষারীয় হয়।
উদাহরণ: চুনাপাথর অঞ্চল থেকে সৃষ্ট রেনজিনা মৃত্তিকা।
২. ক্ষারকীয় উদ্ভিদ থেকে সৃষ্ট জৈব পদার্থ
কিছু উদ্ভিদ ক্ষারকীয় পদার্থ উৎপন্ন করে। এই পদার্থ মৃত্তিকার pH বাড়াতে সাহায্য করে এবং মৃত্তিকাকে আরও ক্ষারীয় করে তোলে।
৩. প্রাকৃতিক চুনজাত পদার্থ
মৃত্তিকার মধ্যে চুনজাত পদার্থ থাকলে এটি তার ক্ষারীয়তা বৃদ্ধি করে।
৪. আবহাওয়ার প্রভাব
উষ্ণ এবং শুষ্ক অঞ্চল যেখানে বৃষ্টি কম হয়, সেখানে মৃত্তিকায় খনিজ পদার্থের ধোয়া বা অপসারণ কম হয়। ফলে মৃত্তিকা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষারীয় থাকে।
ক্ষারীয় মৃত্তিকার উদাহরণ
ক্ষারীয় মৃত্তিকার কিছু পরিচিত উদাহরণ হলো:
চারনোজেম (Chernozem)
সোলানচাক (Solonchak)
সোলোনেজ (Solonetz)
রেনজিনা (Renzina)
এই সমস্ত মৃত্তিকা তাদের প্রাকৃতিক উপাদান এবং অবস্থানের কারণে ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
উপসংহার
মৃত্তিকার ক্ষারীয়তা মূলত তার উৎপত্তি, খনিজ পদার্থের উপস্থিতি, উদ্ভিদজাত উপাদান এবং আবহাওয়া দ্বারা নির্ধারিত হয়। ক্ষারীয় মৃত্তিকা বোঝা ও তার ব্যবস্থাপনা কৃষি এবং উদ্ভিদ চাষে গুরুত্বপূর্ণ।

No comments: