ভূমিকম্পের ছায়া বলয়: বিজ্ঞানীরা কিভাবে আবিষ্কার করেছেন?

ভূমিকা

ভূমিকম্প আমাদের গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে অনেক তথ্য দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ধারণাগুলোর একটি হলো ভূমিকম্পের ছায়া বলয়। এই ধারণাটি বুঝতে পারলে আমরা পৃথিবীর অভ্যন্তরের তরল এবং কঠিন অংশগুলোর বিন্যাস সম্পর্কে জানতে পারি।

ভূমিকম্পের ছায়া বলয়

ছায়া বলয় কী?

ভূমিকম্পের সময় সৃষ্টি হওয়া তরঙ্গগুলি (seismic waves) পৃথিবীর মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভূমিকম্প কেন্দ্র এবং উপকেন্দ্রের মধ্যে 105° থেকে 143° কোণ বরাবর কিছু অঞ্চল থাকে যেখানে এই তরঙ্গগুলি পৌঁছায় না। এই তরঙ্গহীন অঞ্চলকেই ভূমিকম্পের ছায়া বলয় বলা হয়।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

  • ‘S’ তরঙ্গ চলে না: S তরঙ্গ বা সেকেন্ডারি তরঙ্গগুলি লিকুইডে যেতে পারে না। তাই ছায়া বলয়ের মধ্যে S তরঙ্গ দেখা যায় না।

  • ‘P’ তরঙ্গ প্রতিসরিত হয়: P তরঙ্গ বা প্রাইমারি তরঙ্গ তরল পদার্থে ঢোকার সময় প্রতিসরণ হয়। তাই ছায়া বলয়ের কিছু অংশে P তরঙ্গও ধরা পড়ে না।

  • ছায়া বলয়ের পরিমাণ: S তরঙ্গ দ্বারা তৈরি ছায়া বলয় প্রায় 37% এবং P তরঙ্গ দ্বারা তৈরি ছায়া বলয় প্রায় 26.5%।

আবিষ্কারক

ছায়া বলয় প্রথম 1912 সালে প্রফেসর বেনো গুটেনবার্গ আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কার ভূতাত্ত্বিকদেরকে পৃথিবীর অভ্যন্তরের তরল কেন্দ্র ও কঠিন অংশের সঠিক অবস্থান বোঝার সুযোগ দেয়।

উপসংহার

ভূমিকম্পের ছায়া বলয় আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কাঠামোর রহস্য উন্মোচন করে। P ও S তরঙ্গের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে আমরা জানতে পারি যে পৃথিবীর কেন্দ্রের একটি অংশ তরল এবং কিছু অংশ কঠিন। এই ধারণা ভূতত্ত্বের জন্য এক বিপ্লবাত্মক পদক্ষেপ।

No comments:

Powered by Blogger.